(ক) পৃষ্ঠদেশ আবৃত করে (Covering the surface): পৃষ্ঠদেশ আবৃত করে পদ্ধতিতে বস্তা, ঘাস, খড়কুটা, কচুরিপানা ইত্যাদি দ্বারা আচ্ছাদিত করা হয় এবং মাঝে মাঝে এর উপর পানি ছিটিয়ে কিউরিং করা হয়। এ পদ্ধতি খাড়া এবং ঢালু পৃষ্ঠের জন্য বহুলভাবে ব্যবহারিত হয়। কিউরিং চলাকালীন সময়ে অল্প সময়ের জন্যও শুকাতে দেয়া উচিত নয়।
![]() |
পৃষ্ঠদেশ আবৃত করে (Covering the surface) |
(খ) ঝিল্লি কিউরিং (Membrane curing): পানিরোধী মেমব্রেন দ্বারা কংক্রিট পৃষ্ঠকে আচ্ছাদিত করে এ প্রকারে কিউরিং করা এক সপ্তাহ ধরে এ কাজ করা হয়। কংক্রিটের বাষ্পীভবন প্রতিরোধ করাই এ প্রকার কিউরিং-এর উদ্দেশ্যে। মোমের ইমালশন, বিটুমিনের ইমালশন, বিটুমিনের পানিরোধী কাগজ এবং প্লাস্টিক শিট ইত্যাদি সাধারণ মেমব্রেন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটা সিলিং কম্পাউন্ড (Sealing compound) হিসেবেও পারিচিত। আর্দ্র কিউরিং-এর চেয়ে এ পদ্ধতিতে কিউরিং-এ কংক্রিটের শক্তি কম হয়।
(গ) ঘের পদ্ধতি (Ponding method): এটা সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি। আনুভূমিক তলে পানি জমা করে কিউরিং করা হয়, যেমন- মেঝে, ছাদ, রাস্তা ইত্যাদি। কংক্রিট স্থাপনার পর প্রথমে Canvas দ্বারা পৃষ্ঠকে ঢেকে দেয়া হয়। ২৪ ঘণ্টা পর আচ্ছোদন উঠিয়ে ছোট ছোট বর্গাকার বা আয়তাকার ঘের তৈরি করে এর মধ্যে পানি পূর্ণ করা হয়। মাটি দ্বারা ঘের দেয়া হয়। এ পদ্ধতিটি উত্তম, তবে পানির প্রয়োজন বেশি। কিউরিং শেষে পরিষ্কার করাও খুবই কষ্টসাধ্য।
(ঘ) ছায়াময় করে (Shading): ছায়াময় পদ্ধতির উদ্দেশ্য হলো কংক্রিটের বাস্পীভবন প্রতিরোধ করে অবিরাম ভিজিয়ে রাখা। এ পদ্ধতিটি তাপ, সরাসরি সূর্যকিরণ এবং বাতাস থেকেও কংক্রিট পৃষ্ঠকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ঠান্ডায়, শেডিং (Shading) তাপ সংরক্ষণ করে সিমেন্টের বিক্রিয়ায় সাহায্য করে। তাবু টানিয়ে, পানিরোধী কাগজ বা প্লাস্টিক শিট বিছিয়ে বাষ্পীভবন প্রতিরোধ করা যায়।
(ঙ) পানি ছিটিয়ে (Sprinkling water): পানি ছিটিয়ে কিউরিং পদ্ধতিতে কিউরিং করতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এতে নির্দিষ্ট সময় পর পর পানি কংক্রিটের উপর ছিটিয়ে দেয়া হয় এবং কখনও পৃষ্ঠকে শুকাতে দেয়া উচিত নয়।
(চ) বাষ্পীয় কিউরিং (Steam curing): ছোট ছোট প্রি-কাস্ট মেম্বারে জলীয় বাষ্প প্রয়োগ করে স্বল্প সময়ে কিউরিং করা হয়। ২২°সে তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় কিউরিং কার্য ত্বরান্বিত হয়।
বিভিন্ন কিউরিং পদ্ধতির সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতাসমূহ
(ক) ছায়াময় পদ্ধতির সুবিধা ও সীমাবদ্ধতাসমূহঃ
সুবিধাসমূহঃ
১। আবহাওয়ার প্রভাব থেকে কংক্রিট পৃষ্ঠকে রক্ষা করে।
২। কংক্রিটের বাষ্পীভবন প্রতিরোধ করে অবিরাম ভিজিয়ে রাখে। ৩। ঠান্ডায় তাপ সংরক্ষণ করে সিমেন্টের বিক্রিয়ায় সাহায্য করে।
সীমাবদ্ধতাসমূহঃ
১। এ পদ্ধতির প্রচলন খুবই কম।
২। তাবু টানিয়ে, পানিরোধী কাগজ বা প্লাস্টিক শিট ব্যবহার করতে হয় বলে এ পদ্ধতিতে কিউরিং-এ ব্যয় বেশি হয়।
সুবিধাসমূহঃ
খ) পৃষ্ঠদেশ আবৃত পদ্ধতির সুবিধা ও সীমাবদ্ধতাসমূহঃ (
১। খাড়া এবং ঢালু পৃষ্ঠে এ পদ্ধতি সুবিধাজনক।
২। বস্তা, ঘাস, খড়কুটা, কচুরিপানা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় বলে খরচ কম হয়।
সীমাবদ্ধতাসমূহঃ
১। সব সময়ই পানি ছিটাতে হয় বলে খুবই অসুবিধা হয়।
২। কংক্রিট পৃষ্ঠ মাঝে মাঝে শুকিয়ে যায়, যা ক্ষতিকারক।
Post a Comment